রোজগার কথা
- মানসরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
ক্লান্তি ছাড়া নতুন কোনো খবর
নেই আজ, নেই কাজের চাপ
অপেক্ষায় আছি, স্বজন আসবে ঘরে
আবার ভাবছি - আসবেকি!
শহরে ট্রাফিক জ্যাম
নিত্যদিন, ...আজও
যখন অবসর আমার
এক মাগ চা নিয়ে জানলা
দিয়ে বিকেল দেখি
সোহাগ সোহাগী দেখি সংগ্রামী
বেশ ভালো আছে ...
ওরা চড়ুই
আমার ঘরের কোণে থাকে
প্রেরণা দেয় , শেখায়
ধুলো বালি কাদা মেখে স্নান
এভাবেই ক্লান্তি দূর
রবি থেকে শুক্র একচক্র রেখায়
আবার ক্লান্তি আবার ক্ষমা
নিজেকে
খাতা কলম নিয়ে কাটি বার বার
হিজিবিজি কবিতার কথা
... প্রেম মানে দুটো লিঙ্গের উদলা
হয়ে কিছু কথা বলা নয়
দুটো মনের দিগন্ত রেখা ছুঁয়ে
এক কক্ষপথে জীবন
তারপর রূপান্তর...
তারপর কাটি বারবার
লোকে পাগল বলবে ভয়
আবার কাটি , ভাবি, লিখি
ভালবাসা কে দাঁড় করাই
... মালটা দাঁড়ায় না
…প্রকাশ্যে তোমায় দেখি চিরন্তন
কালো চুলে একটু বাদামী রং
ক্লিপ ইদানিং ফ্যাশন
নির্জনরাত একজোড়া প্রাণ স্পন্দন
তোমার ছবি...
সত্যিই স্বজন এলোনা তখনও
এল সন্ধা, কিছু নারীর নাম
হাই তুলে সিগারেট-এ ধুনো দিই
টুল টেনে বসি, ভাবি পুরনো
কবিতাটা রিফ্রেশ করি
না থাক, ওটাকে পচাই আরও
ডিভোর্স দিইনি আজও
ভালবেসে আছি মোবাইল
কবিতা শোনাব তোমায়
জয় গোস্বামীর
আমি এথেলবাড়ি যাব ...
না, ভালো লাগছেনা বরং
ওই বৃদ্ধের মিষ্টি হাসি
কথায় আঁকি - রোজগার কথা
বৈশাখী মেঘের নিচে কামরাঙ্গা
গঞ্জবাজার পাশে রেল লাইন
অন্যের খুঁটিতে হেলান
তিন মাথা এক্করে এক বৃদ্ধ
গুনছে পায়ে পায়ে সকাল সময়
তখনও সামনে
স্টিলের গামলায় একটি কচি লাউ
অধীর আলোচনা চিট চিট ফান্ড
চারিদিকে ফিরে পাওয়ার আশা
চিটে গুড়ে ভাসে মৌমাছির ভনভন
চোখের সামনে দশ টাকার নোট
নাচছে ক্রেতার তর্জনী-মধ্যমার ফাঁকে
তবু স্থির বুড়ো মন
চোখে ভাবনা চাওয়া পাওয়া
থেকে বাড়ির উঠোনে বাহান
সে এক অদ্ভুত দৃশ্য
পলকে বৃদ্ধ মাথায় গামলা তুলে
গামছায় পিছন ঝেড়ে সটান ছুট
যখন একশ দিনের কাজ অজানা
এরপর গোঁসাই বলে ডাক
- কত হলো গোঁসাই ?
পিছু ফিরে উত্তরে ফোকলা হাসি
- তিন পনের পয়তাল্লিশ
- যাও গোঁসাই যাও
মিষ্টি কিনে বাড়ি যাও
মিষ্টি কথার গামলা মাথায়
রেলপথ ধরে হেঁটে যায় গোঁসাই ...
No comments:
Post a Comment